June 23, 2008

সুন্দরবনে বাঘ হত্যা

সুন্দরবনে একটি বাঘ হত্যা করা হয়েছে। সমকাল পত্রিকার ২২ জুন ২০০৮ সংখ্যায় প্রকাশিত খবর নিম্নরূপ:

ছবি: সমকাল পত্রিকা
আক্রমণে তিনজন নিহত হওয়ার পর সেই বাঘকে পিটিয়ে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা ও শ্যামনগর প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলার হরিণনগর এলাকার লোকালয়ে ঢুকে পড়া বাঘটিকে শনিবার সকালে পিটিয়ে হত্যা করেছে গ্রামবাসী। শুত্রক্রবার রাতে ওই বাঘের আক্রমণে তিনজন নিহত হয়।
এলাকাবাসী জানায়, গত শুক্রবার সল্পব্দ্যার পর এক বিশাল আকৃতির রয়েল বেঙ্গল টাইগার সুন্দরবনের সিংহড়তলি খাল পার হয়ে খাদ্যের সন্ধানে মুন্সীগঞ্জ জেলেপল্লীতে ঢুকে পড়ে। প্রথমেই বাঘটির কবলে পড়েন তারক সরদার (৩২) নামের এক পথচারী। তাকে পেছন থেকে আক্রমণ করার পর ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ সময়ে এলাকাবাসী বাঘ দেখে জোরে চিৎকার করলে বাঘটি পার্শ্ববর্তী ভূপতি মণ্ডলের বসতবাড়িতে ঢোকে। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাঘটি ভূপতির ঘরে ঘুমিয়ে থাকা স্ত্রী সীতাকে (৪০) থাবা মারলে তার চিৎকারে শ্বশুর অঘোর মণ্ডল (৮৫) এগিয়ে আসেন। বাঘটি তাকেও আক্রমণ করে। এরা দু’জনই প্রাণ হারানোর পর গোটা এলাকায় বাঘ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সারা রাতে মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে ঘটনাস্থলের অদূরে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি অবলোকন করে। গতকাল ভোরে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এলাকাবাসী জীবনবাজি রেখে বাঘটিকে খুঁজতে থাকে। এ সময় সংবাদ মেলে নরঘাতকটি মাধুপাড়া গ্রামে অবিনাশ মণ্ডলের ৪টি পোষা ছাগল খেয়ে ঘরের চালের ওপর বসে আছে। শত শত গ্রামবাসী তখন বাঘটিকে মোকাবেলা করার জন্য ফাঁস দড়ি ও লাঠিসোটা নিয়ে অবিনাশের বাড়ি ঘিরে কৌশল খুঁজতে থাকে। পরে মোটা ফাঁস দড়ি গলায় পরিয়ে বাঘটিকে ঘরের চালা থেকে নিচে নামানো হয়। এ সময় হরষিত (২৮) নামের এক গ্রামবাসী বাঘের থাবায় আহত হন। পরে এলাকাবাসী এলোপাতাড়ি পিটিয়ে বাঘটিকে হত্যা করে।

মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধা এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, মৃত বাঘটিকে বনবিভাগের সদস্যরা কদমতলা ফরেস্ট অফিসে নিয়ে গেছেন। বাঘের থাবায় নিহতদের সৎকার ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের এসিএফ রাজেশ চাকমা জানান, কদমতলা অফিসে বাঘটির পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। মানুষের রক্তের নেশায় এটি লোকালয়ে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

0 comments:

Post a Comment