October 18, 2008

বাংলাদেশে যত ডলফিন

বাংলাদেশ হলো বিভিন্ন প্রজাতির বিপুলসংখ্যক জলজ স্তন্যপায়ীর অবাধ বিচরণক্ষেত্র। এশিয়ার অন্যান্য দেশ, যারা বাংলাদেশের প্রতিবেশী, তাদের তুলনায় বাংলাদেশের নদী ও উপকুলীয় এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির জলজ স্তন্যপায়ী অনেক বেশি দেখা যায়। বাংলাদেশের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, উপকুলীয় ও গভীর সমুদ্রের জলভাগ অসাধারণ সব প্রজাতির জলজ স্তন্যপায়ীর জন্য খুবই উপযোগী বাসস্থান।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পরিচিত ডলফিন হলো শুশুক। এরা সত্যিকারের নদীর ডলফিন। বিশেষ আকৃতির লম্বা ঠোঁট, পিঠের ছোট ডানা আর দুই পাশের বড় পাখনার কারণে শুশুক দেখতে একটু অদ্ভুত। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নদীর সব জায়গাতেই শুশুকের বাস। সত্যিকারের নদীর ডলফিন সাগরের ডলফিনের দুরসম্পর্কের আত্মীয়। এদের ঠোঁট লম্বা এবং চোখ খুব ছোট। শুশুকের দৃষ্টিশক্তি খুবই দুর্বল। নদীর যে ঘোলা পানিতে এদের বসবাস, সেখানে দৃষ্টিশক্তির খুব একটা প্রয়োজন হয় না। এর বদলে এদের ইকোলোকেশনের শক্তি অনেক প্রখর। চলাচলের সময় জলজ স্তন্যপায়ীরা প্রতিধ্বনিত শব্দ দিয়ে মস্তিষ্কেক প্রতিচ্ছবি তৈরি করে।

শুশুকের শরীরের দুই পাশের বড় পাখনা ও নমনীয় ঘাড়ের জন্য এরা সহজে চলাচল করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, এরা কাত হয়ে সাঁতার কাটে। বড় পাখনার সাহায্যে এরা নদীর তলদেশ ছুঁয়ে পথ নির্ধারণ করে। এরা কিন্তু মোটেই সমাজবদ্ধ নয়। সাধারণত একাই থাকে। তবে অনেক সময় নদীর বাঁকে ও মোহনায় ছোট ছোট দলে দেখা যায়।

কিছু প্রজাতির ডলফিন নদী ও সাগর উভয় স্থানেই দেখা যায়। যেমন ইরাবতী ডলফিন। আমাদের দেশে এরা সুন্দরবনের মিঠা পানির নদী আর বঙ্গোপসাগরের উপকুলীয় অঞ্চলে বাস করে। নদীসহ যেসব উপকুলীয় জলাশয়ে নদী থেকে মিঠা পানি আসে, সেসব স্থানে ইরাবতী ডলফিন দেখা যায়। সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের জলপথে এরা শুশুকের সঙ্গে মিলেমিশেই থাকে।

গোলাপি ডলফিন বা ফিনলেস পরপয়েসকে মাঝেমধ্যে সুন্দরবনের নদীতে দেখা গেলেও এরা আসলে উপকুলীয় জলভাগে বাস করে, যেখানে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নদী থেকে মিঠা পানি আসে।

প্রথম আলো, ১৭, অক্টোবর, ২০০৮

1 comments:

রেজওয়ান said...

শুশুক, ইরাবতী ডলফিন, গোলাপি ডলফিন এর ইংরেজী বা দ্বীপদ নাম যদি জানা থাকে কাইন্ডলি জানাবেন।

Post a Comment